আজ দুপুরে দোকানে বসার সাথে সাথে একজন কাস্টমার আসে আমার মোটামুটি পরিচিত আমি তাকে চিনি কিন্তু তিনি আমাকে চিনেনা। একটা কাগজে একটা মোবাইল নাম্বার লিখে সেখানে 14,500 টাকা একটা এমাউন্ট লিখে নিয়ে আসে যে টাকাটা পাঠান।
আমি দেখি আমার তিনি পরিচিত আমি সাথে সাথে টাকা পাঠানোর চেষ্টা করি, তবে যখন একদম শেষ সময় পাসওয়ার্ড দেওয়ার পরে যখন টাকা চাই তখন খেয়াল করি, তার কানে মোবাইল তিনি কথা বলতেছেন। তখন আমি তাকে বলি যে ১৪ হাজার ৫০০ টাকা নগদ দেন। তিনি তখন বলেন তুমি পাঠাও আমি দিচ্ছি এই কথা বলার সাথে সাথে আমি টাকাটা পাঠানোর চেষ্টা করি।
এরপর যখন টাকা চাই তখন তিনি বলেন দাঁড়াও চেক করতেছি টাকা পেয়েছে কিনা আমার তখন পুরোপুরি সন্দেহ হয় আমি তারপর বলি আপনি আগে টাকা দেন।
তারপর তিনি তার কাঁধে থাকা ব্যাগ আমার সামনে তুলে ধরেন যে এখানে টাকা আছে তুমি রেখে দাও, আমি তখন সাথে সাথে বলি যে না আপনি টাকা আমাকে দেন, ওদিকে মোবাইল তার কানে তখন পাশ থেকে বলতে থাকে টাকা আসে নাই, আমি বলি টাকা গেছে তারপর তারা বলে আমি মিথ্যা কথা বলছি, আমি বলছি টাকা গেছে সাথে সাথে আমি একটা ফেইক মেসেজ রেডি করি যেটার মাধ্যমে তাকে দেখাই যে এখানে টাকা চলে গেছে।
এরপর ওপাশ থেকে মোবাইলটি আমার কানে ধরিয়ে দেয় তারা আমাকে খুব বুঝাচ্ছেন যে টাকা আসে নাই, আপনি টাকা আগে পাঠান আমি বলছি যে আমি একবার টাকা পাঠাইছি সেই টাকা দিতে বলেন তারপর আমি অন্য টাকা পাঠাবো, এরকম অনেক সময় বকাবকি রাগারাগি এক পর্যায়ে গেলে আমার সামনে থাকা যে মানুষটি টাকা পাঠাতে এসেছে তাকে আমি বলি যে আপনি টাকা দেন তিনি বলেন যে টাকা তো আমি দেব।
তারপর আমি বলি কি হয়েছে আমাকে বলেন, তিনি তখন বলেন যে অফিস থেকে ফোন দিছে আমার জরুরী টাকা পাঠাতে হবে, আমি তখন বলি যে এটা তো হ্যাকার আপনাকে হ্যাক করেছে তখন তিনি আমাকে বলেন যে না হ্যাকার না।
আমি অনেক সময় ধরে তাকে বোঝানোর চেষ্টা করি তিনি কোনভাবে বুঝতেছেন না তিনি বারবার আমাকে বলতেছেন যে আমি টাকা এখানে দিয়ে যাব। আমি তখন তাকে বলি আপনি টাকা যেটা পাঠিয়েছি সেটা দেন সে আমাকে বলে টাকা আমি দেবো সমস্যা নেই।
এক পর্যায়ে আমি তাকে বলি আপনার কি হয়েছে আমাকে বলেন তিনি বলেন যে, তাকে ১৫২০০ টাকা পাঠাইছে এখন ১৪৫০০ টাকা পাঠাইতে বলে, আমি তখন বলি তাহলে আপনাকে যে ১৫২০০ টাকা পাঠাইছে আপনি সেটা ব্যালেন্স চেক করেন.
এরপর যখন তিনি ব্যালেন্স চেক করেন দেখেন তার ব্যালেন্সে আগের যে ২০৮ টাকা ছিল সে টাকাও নাই। সাথে সাথে তিনি হতাশ হয়ে যান এবং তিনি ওই মোবাইলের ওপাশে থাকা তাদেরকে খুব গালাগাল করেন। ওপাশ থেকে হ্যাকাররা বলতেছিল ভাই আপনি এই দোকানদারকে টাকা দিয়েন না কারণ এ দোকানদার অনেক বড় বাটপার অনেক বড় চিটার আমি কানে কানে শুনতেছি। আর মনে মনে হাসতেছি যে এক বাটপার আমাকে বলে আমি নাকি তার চেয়ে বড় বাটপার।
এমন সময় তার কাঁধে থাকা ২ লক্ষ টাকার উপরে হবে এমন টাকার ব্র্যান্ডিল থেকে ১০০ টাকার ব্যান্ডিল আমাকে ১৪ হাজার ৫০০ টাকা হিসাব করে দেন। এই নাও টাকা আমি আসলে হ্যাকারের পাল্লায় পড়েছিলাম আমি তখন তাকে বললাম যে আমি তো আপনাকে বারবার জিজ্ঞেস করেছি কখনো তিনি শুনিনি।
টাকাটা দিয়ে তিনি চলে যান তার কিছুক্ষণ পর আবার ব্যাক করে এসে আমাকে বলেন যে তুমি এই টাকার কথা কাউকে বলিও না যে আমি হ্যাকারের পাল্লায় পড়েছিলাম।
আমি তখন তাকে হেসে হেসে বলি আসলে আমি আপনার টাকা পাঠায় নাই আমি এই যখন দেখেছি আপনার কানে মোবাইল সাথে সাথে আমার সন্দেহ হয়েছে এবং আমি টাকাটা পাঠায়নি এই নেন আপনার ১৪ হাজার ৫০০ টাকা।
লোকটা আকাশ ভেঙে পড়ল এবং তিনি আমাকে খাওয়ানোর চেষ্টা করেছিল এবং বলে তুমি কিছু রাখো,,,আমি বলি না,,, তবে আমি এরকম ছোট ছোট ভালো কাজ করে কখনো খাইনি । এরকম টাকা ফেরত দিয়েছি প্রায় ৩ জনকে। আর হাতেনাতে ধরিয়ে দিয়েছি প্রায় ৮ থেকে ১০ জনকে যারা হ্যাকারের পাল্লায় করেছিল।
ফেসবুকে শেয়ার করার একটাই কারণ সেটা হচ্ছে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য কোন বাহবা অথবা ভালো মানুষ সাজার জন্য নয়। দোয়া করবেন





