ছেলেটির নাম নাহিদ, বয়স মাত্র ২২। পড়াশোনার কারণে মালয়েশিয়ায় গিয়েছিল, নতুন এক পরিবেশে একা একা দিন কাটাতো। সেখানেই তার পরিচয় হয় লায়লা নামের এক মহিলার সাথে, বয়সে ৩৫, মার্জিত, সুন্দর, তবে চোখের ভেতরে এক অজানা শূন্যতা। প্রথম দেখাতেই নাহিদের মনে হয়েছিল, লায়লার চোখে যেন জমে আছে হাজারো কষ্ট, অথচ ঠোঁটের হাসি দিয়ে সেগুলো ঢেকে রাখে।
লায়লার অতীত সহজ ছিল না। কয়েক বছর আগে তার বিয়ে হয়েছিল, কিন্তু সেই সংসার টেকেনি। স্বামী তাকে ছেড়ে চলে গিয়েছিল আরেকজনের জন্য। তখন থেকেই সে একাকী জীবনের সাথে লড়াই করে বেঁচে আছে। নাহিদের সরল হাসি আর স্নিগ্ধ উপস্থিতি ধীরে ধীরে লায়লার সেই ভাঙা মনকে শান্ত করতে শুরু করলো। নাহিদও বুঝতে পারছিল, লায়লার ভেতরে অদ্ভুত এক উষ্ণতা আছে যা তাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে।
কথোপকথন থেকে শুরু, ছোট ছোট দেখা, তারপর দীর্ঘ সময় একসাথে কাটানো—সবকিছু যেন দুজনকে আরও কাছে নিয়ে এলো। বয়সের পার্থক্য থাকলেও নাহিদের ভালোবাসা ছিল অটুট, আর লায়লা প্রতিদিন নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করছিল। কিন্তু লায়লা মাঝে মাঝে ভয় পেত, সমাজ কী বলবে? নাহিদের পরিবার কী ভাববে? এই ভয় তার হাসির আড়ালে চোখ ভিজিয়ে রাখতো।
এক সন্ধ্যায় বৃষ্টিভেজা আকাশের নিচে নাহিদ লায়লাকে বলেছিল, “তুমি যদি চাও, আমি তোমার হাত ছাড়বো না কখনো।” লায়লার চোখে তখন অশ্রু গড়িয়ে পড়ছিল। সে জানতো, তার জীবনে সুখ আসতে দেরি হলেও এবার সত্যিকারের ভালোবাসা দরজায় কড়া নাড়ছে। তবুও অতীতের দাগ তাকে তাড়া করতো—হয়তো এই সম্পর্কও কোনো একদিন ভেঙে যাবে, হয়তো সমাজ মানবে না।
তবুও দুজনেই জানতো, ভালোবাসা কেবল বয়স দেখে জন্মায় না, জন্মায় হৃদয়ের স্পন্দনে। আর সেই স্পন্দন নাহিদ আর লায়লার জীবনে একসাথে বেজে উঠেছিল—যেখানে ছিল ভালোবাসার উষ্ণতা, আর অতীতের কষ্টের আঁচ।

No comments:
Post a Comment