বিকাশে দেখে শুনে টাকা আদান প্রদান করছেন তো?

 আজ দুপুরে দোকানে বসার সাথে সাথে একজন কাস্টমার আসে আমার মোটামুটি পরিচিত আমি তাকে চিনি কিন্তু তিনি আমাকে চিনেনা। একটা কাগজে একটা মোবাইল নাম্বার লিখে সেখানে 14,500 টাকা একটা এমাউন্ট লিখে নিয়ে আসে যে টাকাটা পাঠান। 



আমি দেখি আমার তিনি পরিচিত আমি সাথে সাথে টাকা পাঠানোর চেষ্টা করি, তবে যখন একদম শেষ সময় পাসওয়ার্ড দেওয়ার পরে যখন টাকা চাই তখন খেয়াল করি, তার কানে মোবাইল তিনি কথা বলতেছেন। তখন আমি তাকে বলি যে ১৪ হাজার ৫০০ টাকা নগদ দেন। তিনি তখন বলেন তুমি পাঠাও আমি দিচ্ছি এই কথা বলার সাথে সাথে আমি টাকাটা পাঠানোর চেষ্টা করি। 


এরপর যখন টাকা চাই তখন তিনি বলেন দাঁড়াও চেক করতেছি টাকা পেয়েছে কিনা আমার তখন পুরোপুরি সন্দেহ হয় আমি তারপর বলি আপনি আগে টাকা দেন। 



 তারপর তিনি তার কাঁধে থাকা ব্যাগ আমার সামনে তুলে ধরেন যে এখানে টাকা আছে তুমি রেখে দাও, আমি তখন সাথে সাথে বলি যে না আপনি টাকা আমাকে দেন, ওদিকে মোবাইল তার কানে তখন পাশ থেকে বলতে থাকে টাকা আসে নাই, আমি বলি টাকা গেছে তারপর তারা বলে আমি মিথ্যা কথা বলছি, আমি বলছি টাকা গেছে সাথে সাথে আমি একটা ফেইক মেসেজ রেডি করি যেটার মাধ্যমে তাকে দেখাই যে এখানে টাকা চলে গেছে। 


এরপর ওপাশ থেকে মোবাইলটি আমার কানে ধরিয়ে দেয় তারা আমাকে খুব বুঝাচ্ছেন যে টাকা আসে নাই, আপনি টাকা আগে পাঠান আমি বলছি যে আমি একবার টাকা পাঠাইছি সেই টাকা দিতে বলেন তারপর আমি অন্য টাকা পাঠাবো, এরকম অনেক সময় বকাবকি রাগারাগি এক পর্যায়ে গেলে আমার সামনে থাকা যে মানুষটি টাকা পাঠাতে এসেছে তাকে আমি বলি যে আপনি টাকা দেন তিনি বলেন যে টাকা তো আমি দেব। 



তারপর আমি বলি কি হয়েছে আমাকে বলেন, তিনি তখন বলেন যে অফিস থেকে ফোন দিছে আমার জরুরী টাকা পাঠাতে হবে, আমি তখন বলি যে এটা তো হ্যাকার আপনাকে হ্যাক করেছে তখন তিনি আমাকে বলেন যে না হ্যাকার না। 


 আমি অনেক সময় ধরে তাকে বোঝানোর চেষ্টা করি তিনি কোনভাবে বুঝতেছেন না তিনি বারবার আমাকে বলতেছেন যে আমি টাকা এখানে দিয়ে যাব। আমি তখন তাকে বলি আপনি টাকা যেটা পাঠিয়েছি সেটা দেন সে আমাকে বলে টাকা আমি দেবো সমস্যা নেই। 


এক পর্যায়ে আমি তাকে বলি আপনার কি হয়েছে আমাকে বলেন তিনি বলেন যে, তাকে ১৫২০০ টাকা পাঠাইছে এখন ১৪৫০০ টাকা পাঠাইতে বলে, আমি তখন বলি তাহলে আপনাকে যে ১৫২০০ টাকা পাঠাইছে আপনি সেটা ব্যালেন্স চেক করেন.


এরপর যখন তিনি ব্যালেন্স চেক করেন দেখেন তার ব্যালেন্সে আগের যে ২০৮ টাকা ছিল সে টাকাও নাই। সাথে সাথে তিনি হতাশ হয়ে যান এবং তিনি ওই মোবাইলের ওপাশে থাকা তাদেরকে খুব গালাগাল করেন। ওপাশ থেকে হ্যাকাররা বলতেছিল ভাই আপনি এই দোকানদারকে টাকা দিয়েন না কারণ এ দোকানদার অনেক বড় বাটপার অনেক বড় চিটার আমি কানে কানে শুনতেছি। আর মনে মনে হাসতেছি যে এক বাটপার আমাকে বলে আমি নাকি তার চেয়ে বড় বাটপার। 


এমন সময় তার কাঁধে থাকা ২ লক্ষ টাকার উপরে হবে এমন টাকার ব্র্যান্ডিল থেকে ১০০ টাকার ব্যান্ডিল  আমাকে ১৪ হাজার ৫০০ টাকা হিসাব করে দেন। এই নাও টাকা আমি আসলে হ্যাকারের পাল্লায় পড়েছিলাম আমি তখন তাকে বললাম যে আমি তো আপনাকে বারবার জিজ্ঞেস করেছি কখনো তিনি শুনিনি। 


টাকাটা দিয়ে তিনি চলে যান তার কিছুক্ষণ পর আবার ব্যাক করে এসে আমাকে বলেন যে তুমি এই টাকার কথা কাউকে বলিও না যে আমি হ্যাকারের পাল্লায় পড়েছিলাম। 


আমি তখন তাকে হেসে হেসে বলি আসলে আমি আপনার টাকা পাঠায় নাই আমি এই যখন দেখেছি আপনার কানে মোবাইল সাথে সাথে আমার সন্দেহ হয়েছে এবং আমি টাকাটা পাঠায়নি এই নেন আপনার ১৪ হাজার ৫০০ টাকা। 


লোকটা আকাশ ভেঙে পড়ল এবং তিনি আমাকে খাওয়ানোর চেষ্টা করেছিল এবং বলে তুমি কিছু রাখো,,,আমি বলি না,,, তবে আমি এরকম ছোট ছোট ভালো কাজ করে কখনো খাইনি । এরকম টাকা ফেরত দিয়েছি প্রায় ৩ জনকে। আর হাতেনাতে ধরিয়ে দিয়েছি প্রায় ৮ থেকে ১০ জনকে যারা হ্যাকারের পাল্লায় করেছিল।


ফেসবুকে শেয়ার করার একটাই কারণ সেটা হচ্ছে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য কোন বাহবা অথবা ভালো মানুষ সাজার জন্য নয়। দোয়া করবেন

চোরের মায়ের বড় গলা

চোরের মায়ের বড় গলা

 ইফফাত রাতে ঘুমাচ্ছিলেন। ঘুমন্ত অবস্থায় চোখে মোবাইলের টর্চের আলো অনুভব করায় ঘুম ভেঙ্গে যায়। কেউ একজন মোবাইলের ফ্ল্যাশ দিয়ে গোপনে উনার ভিডিও ধারণ করছিলেন। উনি চিৎকার করে উঠেন। লোকটিকে ধরে ফেলেন। 



ইফফাত একজন সরকারি শিক্ষিকা। ঢাকায় স্বামী সন্তানসহ থাকেন। একদিনের জন্য বেড়াতে গিয়েছিলেন পাবনায়। বান্ধুবীর বাসায়। সারাদিন বান্ধুবীর সাথে পাবনা ঘুরে বেড়ান। হাসিখুশি মাখা ছবি তুলেন। 


কিন্তু তিনি কল্পনাও করতে পারেননি রাতে উনার জন্য কী অপেক্ষা করছেন। 


পাবনায় সেই বান্ধুবীর বাসায় ঘুমাচ্ছিলেন। উনার রুমে ঢুকে পড়েন বান্ধুবীর ভাই মামুন। মোবাইলের ফ্ল্যাশ জ্বালিয়ে আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করতে থাকে। চোখে ফ্লাশের আলো অনুভব করায় উনার ঘুম ভেঙ্গে যায়। 


ঘুম ভেঙ্গে উনি দেখতে পান মামুনকে। ইফফাত চিৎকার করতে থাকেন। উনার চিৎকার শুনে বান্ধুবী পাশের রুম থেকে চলে আসে। 


বান্ধুবী সব শোনার পর ভাইকে বাঁচাতে বলে, 'যা হয়েছে হয়েছে। এখানেই দ্য ইন্ড কর। ঝামেলা বাড়াইও না।' 


ইফফাত বারবার বলতে থাকে, 'আমি দেখতে চাই কী ভিডিও করেছে।' 


কারণ সে জানে একটি মেয়ের জীবন ধ্বংস করার জন্য পর্ণগ্রাফি কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে। মানুষ কখনও দেখতে যাবে না। সেটি জোরপূর্বক নাকি গোপণে ধারণকৃত।  


ইফফাত প্রমাণ রাখার জন্য এবং ঐ ভিডিও ডিলিট করার জন্য বারবার দেখতে চায় ভিডিওগুলো। 


কিন্তু ওরা কিছুতেই দেখতে দিবে না। কারণ ফোন চেক করতে দিলে তো ভাই অপরাধী প্রমাণিত হয়ে যাবে। 


এমন অবস্থায় আইনের আশ্রয় নেওয়ার হুমকি দিয়ে ইফফাত ঢাকায় চলে আসে। ইফফাতকে বারবার তারা ফোন করে হুমকি দিতে থাকে। তুমি যদি আইনের আশ্রয় নাও। তাহলে আমরা তোমার নামে চুরির মামলা দিবো। 


ইফফাত ঢাকায় জিডি করে। অন্যদিকে পাবনায় তাঁর বান্ধুবী মামলা করে। যেখানে উল্লেখ করা হয়, 'ইফফাত আমাদের বাসায় এসে কফির মধ্যে ঘুমের মেডিসিন খাইয়ে। সবাইকে অজ্ঞান করে আমার ২০ ভরি স্বর্ণ চুরি করে ঢাকায় পালিয়ে গিয়েছে।' 


আমাদের দেশের মহামান্য আদালতও মামলা আমলে নিয়ে পাবনায় ইফফাতকে তলব করে। 


ইফফাতের উকিল আদালতকে জানায়, একজন সরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষিকা। দুই বাচ্চার মা। সে ঢাকা থেকে বান্ধুবীর বাসায় গিয়ে সবাইকে অজ্ঞান করে ২০ ভরি স্বর্ণ চুরি করবে। জেনে শুনে এই ঝুঁকি কেউ নিবে? এটা তো কমনসেন্স নাকি? একজন অবিবাহিত মেয়ের কাছে ২০ ভরি স্বর্ণ কী আদৌ থাকা সম্ভব? 


বান্ধুবী আদালতে চুরির পক্ষে কোন প্রমাণ দেখাতে পারেনি। অন্যদিকে ইফফাতের উকিল সে নির্দোষ এর স্বপক্ষে প্রমাণ আদালতে উপস্থিত করেন - আদালত বর্তমানে ইফফাতকে জামিন দিয়েছেন। 


কোন কিছু প্রমাণের আগেই  তাঁর লাইফটা বিভিন্ন অনলাইন পোর্টাল ওর চরিত্র নিয়ে মিথ্যা নিউজ ছড়িয়ে জাহান্নাম বানিয়ে ফেলেছে। শিক্ষার্থীদের সামনেও মুখ দেখাতে পারছেন না উনি। 


উনি বলেছেন, আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তদন্ত হোক। সেই অনুযায়ী বিচার হোক।   


ইফফাত দুই সন্তানের মা। একজন শিক্ষিকা। একজন স্ত্রী।  


নিজ সম্মান, সম্ভ্রম বাঁচাতে গিয়ে হয়ে গেলেন চোর। তাও তাঁর বান্ধুবীই তার পিঠে চাকু মেরেছে। 


সব ক্ষত শারীরিক নয়, কিছু ক্ষত আসে বিশ্বাসঘাতকতার আঘাতে।

বন্ধুত্ব কেবল হাসি-আনন্দ ভাগাভাগি নয়, বরং আস্থার জায়গা। 


কখনও কী নিজেকে প্রশ্ন করেছি? কাকে বন্ধু বানাচ্ছি? 


একজন বন্ধুর আচার আচরণ কথা বার্তার মধ্যে কোন না কোনভাবে তাঁর চরিত্রের পোস্টমর্টেম করা যায়। সেই অনুযায়ী সতর্ক হওয়া যায়। এই সুরৎহাল রিপোর্ট অনেকে বুঝতে পারে। অনেকে পারে না। অনেকে টের পেয়েও একসাথে খায়, ঘুমায় ঘুরে। একদিন ধরা খায়। 


ছেলেদের বন্ধু বিশ্বাসঘাতকতা করলে সর্বোচ্চ মারধোর করে আহত নিহত করে। কিন্তু মেয়েদের বান্ধুবী বিশ্বাসঘাতকতা করলে সেটার শুরুটা হয় চরিত্রের অস্ত্রপাচার দিয়ে।  


নারীকে ভাঙতে হলে চরিত্র নিয়ে আঘাত করাই সবচেয়ে সহজ অস্ত্র। তাই সাবধান।

প্রেমের টানে কাছে আসা

 ছেলেটির নাম নাহিদ, বয়স মাত্র ২২। পড়াশোনার কারণে মালয়েশিয়ায় গিয়েছিল, নতুন এক পরিবেশে একা একা দিন কাটাতো। সেখানেই তার পরিচয় হয় লায়লা নামের এক মহিলার সাথে, বয়সে ৩৫, মার্জিত, সুন্দর, তবে চোখের ভেতরে এক অজানা শূন্যতা। প্রথম দেখাতেই নাহিদের মনে হয়েছিল, লায়লার চোখে যেন জমে আছে হাজারো কষ্ট, অথচ ঠোঁটের হাসি দিয়ে সেগুলো ঢেকে রাখে।




লায়লার অতীত সহজ ছিল না। কয়েক বছর আগে তার বিয়ে হয়েছিল, কিন্তু সেই সংসার টেকেনি। স্বামী তাকে ছেড়ে চলে গিয়েছিল আরেকজনের জন্য। তখন থেকেই সে একাকী জীবনের সাথে লড়াই করে বেঁচে আছে। নাহিদের সরল হাসি আর স্নিগ্ধ উপস্থিতি ধীরে ধীরে লায়লার সেই ভাঙা মনকে শান্ত করতে শুরু করলো। নাহিদও বুঝতে পারছিল, লায়লার ভেতরে অদ্ভুত এক উষ্ণতা আছে যা তাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে।


কথোপকথন থেকে শুরু, ছোট ছোট দেখা, তারপর দীর্ঘ সময় একসাথে কাটানো—সবকিছু যেন দুজনকে আরও কাছে নিয়ে এলো। বয়সের পার্থক্য থাকলেও নাহিদের ভালোবাসা ছিল অটুট, আর লায়লা প্রতিদিন নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করছিল। কিন্তু লায়লা মাঝে মাঝে ভয় পেত, সমাজ কী বলবে? নাহিদের পরিবার কী ভাববে? এই ভয় তার হাসির আড়ালে চোখ ভিজিয়ে রাখতো।


এক সন্ধ্যায় বৃষ্টিভেজা আকাশের নিচে নাহিদ লায়লাকে বলেছিল, “তুমি যদি চাও, আমি তোমার হাত ছাড়বো না কখনো।” লায়লার চোখে তখন অশ্রু গড়িয়ে পড়ছিল। সে জানতো, তার জীবনে সুখ আসতে দেরি হলেও এবার সত্যিকারের ভালোবাসা দরজায় কড়া নাড়ছে। তবুও অতীতের দাগ তাকে তাড়া করতো—হয়তো এই সম্পর্কও কোনো একদিন ভেঙে যাবে, হয়তো সমাজ মানবে না।


তবুও দুজনেই জানতো, ভালোবাসা কেবল বয়স দেখে জন্মায় না, জন্মায় হৃদয়ের স্পন্দনে। আর সেই স্পন্দন নাহিদ আর লায়লার জীবনে একসাথে বেজে উঠেছিল—যেখানে ছিল ভালোবাসার উষ্ণতা, আর অতীতের কষ্টের আঁচ।



সপ্ন যাবে বাড়ি আমার

 বাঙালি তরুণ আরিফ, বয়স মাত্র ২৭, স্বপ্ন নিয়ে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়ায়। স্টুডেন্ট ভিসায় পড়াশোনা করছিল, কিন্তু বইয়ের পাতার পাশাপাশি জীবনের কঠিন বাস্তবতাও তাকে কাজের সন্ধানে ঘুরিয়ে বেড়াতে বাধ্য করেছিল। একদিন এক ক্যাফেতে পার্ট-টাইম কাজ করতে গিয়ে তার পরিচয় হয় ৩৮ বছরের অস্ট্রেলিয়ান নারী এমিলির সাথে।



 এমিলি ছিল স্বাধীনচেতা, শিক্ষিত, আর জীবনের নানা অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ।।

শুরুটা ছিল খুব সাধারণ—কফি বানানোর সময় দু’জনের হালকা আলাপ। ধীরে ধীরে আলাপ গড়ালো বন্ধুত্বে, আর বন্ধুত্ব রূপ নিলো গভীর সম্পর্কে। আরিফের সরলতা, হাসি আর জীবনের জন্য সংগ্রামের দৃঢ়তা এমিলির মন ছুঁয়ে গেল। অন্যদিকে এমিলির পরিণত বুদ্ধি আর মমতা আরিফকে আশ্রয় দিল এক নতুন ভরসার। বয়সের ফারাক তাদের কাছে গুরুত্বহীন হয়ে গেল। তারা বুঝল, ভালোবাসা সংখ্যা দেখে জন্মায় না, জন্মায় হৃদয়ের মিলন থেকে।


কয়েক মাস পর তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হলো। বিয়ের পর এমিলি আরিফকে বলল, "তোমার দেশ কেমন? তোমার পরিবার?" আরিফের চোখ ভিজে গেল—সে বহুদিন ধরে মায়ের রান্নার গন্ধ, বাবার ডাক, গ্রামের মাটির পথের জন্য মন কাঁদাচ্ছিল। এমিলি একদিন বলল, "চলো, বাংলাদেশে যাই। তোমার মানুষগুলোকে আমি জানতে চাই।"


অবশেষে আজ সেই দিন এসেছে। ঢাকা বিমানবন্দরে নামার সময় আরিফের বুক কেঁপে উঠল। তার পাশে এমিলি, বিদেশি সাজে কিন্তু মনে ভীষণ আন্তরিক। গ্রামের বাড়ির পথে সে এমিলির হাত শক্ত করে ধরল। পথে যেতে যেতে বলল, "ওরা হয়তো অবাক হবে, হয়তো প্রশ্ন করবে, কিন্তু আমি জানি আমার মা-বাবা তোমায় মেনে নেবেন।" এমিলি হাসল, বলল, "আমি শুধু তোমার পরিবারের মেয়ে হয়ে উঠতে চাই।"


গ্রামের বাড়িতে পৌঁছতেই কৌতূহলী চোখে সবাই তাকিয়ে রইল। আরিফ মাকে জড়িয়ে ধরে বলল, "এটাই আমার স্ত্রী, এমিলি।" কিছুক্ষণ নীরবতা, তারপর মায়ের চোখ ভিজে গেল, সে বলল, "আমার ছেলের পছন্দই আমার পছন্দ।"


সেই মুহূর্তে এমিলি শুধু একজন বিদেশি নারী নয়, আরিফের পরিবারের একজন হয়ে উঠল। ভালোবাসা, সংস্কৃতি আর আস্থার মেলবন্ধন হয়ে গেল তাদের নতুন জীবনের গল্প।

প্রেমের সফলতা

একটা সফল প্রমের দিন

 

আমেরিকার প্রবাসী টম ২০১৯ সালে বাংলাদেশে আসেন ঘুরতে। বন্ধুর আমন্ত্রণে এক অনুষ্ঠানে যান আর সেখানে সুন্দরী মিষ্টিকে দেখেই পরিচিত হবার লোভ সামলাতে পারেননি টম। পরিচয়ের সূত্র ধরেই মাঝে মধ্যে হায়-হ্যালো এরপর ফেসবুক ফ্রেন্ড তারপর নিয়মিত দুজনের ফোনে কথা হতো। 



একপর্যায়ে মিষ্টিকে সরাসরি বিয়ের প্রস্তাব দেন টম। সে সময় মিষ্টি তেমন পা"ত্তা দেয়নি।


 একপর্যায়ে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন তারা। কিন্তু মিষ্টির পরিবার বিয়েতে রাজি ছিল না। পরে তারা পরিবারকে না জানিয়ে পালিয়ে বিয়ে করেন। টম আমেরিকার একজন সফল বিজনেসম্যান এবং বিদেশে বেশ কয়েকটি ইন্ডাস্ট্রি ও ক্লাব গড়ে তুলেছেন। তবে মিষ্টিকে বিয়ে করার আগে টম প্রথম বার বিয়ে করেন ২০০১ সালে। 


সে সময় এক অ্যামেরিকান নারীকে বিয়ে করেছিলেন তিনি। সেই স্ত্রী প্রায় ১০ বছর ধরে অসু"স্থ থাকার পর ২০১১ সালে মা"রা যান।  


প্রথম বিয়ের পর প্রায় ২০ বছর সন্তানদের কথা চিন্তা করে বিয়ে করেননি টম। এমনকি স্ত্রীর শো"ক ও সন্তানের চিন্তায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। সিঙ্গেল ফাদার হিসেবেই কাটতে থাকে তার দিন। 


তারপর হঠাৎ বাংলাদেশে ঘুরতে এসে জীবন পাল্টে যায় তার। কয়েকজন বন্ধুর আমন্ত্রণে ২০ বছর পর দেশে ঘুরতে আসেন তিনি। 


বিয়ের পর দুজনেই পাড়ি জমান মার্কিন মুলুকে। সেখানেই সুখে কাটছে তাদের দিন।সত্যি ভালোবাসা মানে না কোনো বয়স, কোনো সময়, কোনো বেড়াজাল। এর বাস্তব উদাহরণ টম ও মিষ্টি ইমাম দম্পতি।

গল্পের নাম পরকিয়া

 পরকিয়া

ছবির বাচ্চাটার বয়স ৫ কি ৬ বছর..

স্কুল..মোবাইল গেমস আর খেলাধুলার বয়সে বাচ্চাটা এসেছে মায়ের প-র-কী-য়ার হাড্ডি হয়ে..



ঘটনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল চত্ত্বর..দেড় ঘন্টা এদের পাশেই বসে ছিলাম..দুজনের প্রেমালাপ..আদুরে হাতাহাতি..কথোপকথন কানে এসেছে বারবার..


বাচ্চাটা নিজের আনন্দে খেলছে..দূরে গেছে অথচ খেয়াল নেই মা এর..বাচ্চাটা বারবার মাম্মা মাম্মা বলছে..মা উত্তরহীন..লোকটাকে আংকেল ডেকেছে কয়েকবার..


পয়েন্টে আসি..কিভাবে সিউর হলাম..


মহিলার ফোনে একটা ভিডিও কল আসে..লোকটাকে চুপ করিয়ে তিনি রিসিভ করেন দূরে গিয়ে..কথা বলতে বলতে আমার কাছাকাছি আসেন..মহিলা বলেন..নিউমার্কেটে কেনাকাটা কর‍তে এসেছেন..


এরপর বাচ্চাকে দেখান..বাচ্চা মোবাইল নিয়ে ভিডিও কলে কথা শুরু করে..বাচ্চা মানুষ..হঠাৎ মোবাইল ঘুরিয়ে মা আর আংকেলকে দেখায়..এতেই ক্ষেপে যায় মাম্মা..কলটা কেটে বাচ্চাকে দেয় কষে থা/প্পড়..কেন আংকেলকে দেখাইলি..এটা-সেটা..


আশপাশের সবাই হতবিহ্বল হয়ে যায়..কিন্তু তাদের কিচ্ছু যায় আসলো না..আবার আদুরে হাতাহাতি শুরু করে দু'জন..বাচ্চা আশপাশেই খেলতে থাকে..এই বাচ্চার ভবিষ্যৎ কি 🙂


- কালেক্টেড

বিরহিণী

 বিরহীনি


ব্যাংকে বসে আছি। এক মেয়ে এসেছে প্রবাস থেকে পাঠানো টাকা তুলতে। ফরম ফিল-আপ করতে পারছে না তাই আমার কাছে নিয়ে আসছে। সে নাকি আগের দিনও এসেছিল। ম্যানেজার নাকি বলেছিল পিন-নাম্বার ভুল, তাই ফিরে গেছে। আমি জিগ্যেস করলাম যিনি টাকা পাঠাইছে তাকে কল দিয়ে কনফার্ম হয়েছেন? পিন-নাম্বার ঠিক আছে? সে বললো- "কল দিছি, নাম্বার ঠিকই আছে"।


তাহলে টেনশন নিয়েন না, আমি ফরম ফিল-আপ করে দিচ্ছি। লাইনে দাঁড়িয়ে টাকা তুলে নিয়ে যান। 



কিছুক্ষণ পর মেয়েটি এসে বলতাছে- ভাইয়া আজকেও নাকি নাম্বার ভুল হইছে। আমি মিলিয়ে দেখলাম, না-কোনো ভুল নেই। তখন জিগ্যেস করলাম আপনাকে কি এই ব্যাংকের কথা বলছে? আর কবে টাকা পাঠাইছে? সে বললো- না, এই ব্যাংকের কথাই বলছে আর টাকা পাঠাইছে গত পরশু। 


তাহলে তো টাকা চলে আসার কথা। এক কাজ করুন, যিনি টাকা পাঠাইছে তাকে একটা কল দেন, আমি কথা বলে দেখি।


কল রিসিভ করতেই আমি বললাম, ভাইয়া আপনি যে নাম্বারটা দিছেন সেটা তো ভুল বলতেছে। আপনি...


(আমাকে থামিয়ে দিয়ে ওপাশ থেকে বললো)

ভাই আপনি একটু তাইরে জিগান তো আমি তাইর কী লাগি? আমি কি তাইর বাপ লাগি, ভাই লাগি, নাকি হাই লাগি? দুই দিন কথা কওনের মাথায়ই আমার কাছে বিশ হাজার ট্যাহা চাইলো ক্যারে?


মেয়েটা কৌতূহলী চোখ নিয়ে বারবার জিজ্ঞেস করছে, ভাইয়া কী হইছে? আর আমি স্তব্ধ হয়ে মেয়েটার চোখের দিকে তাকিয়ে আছি, তাকে এখন আমি কী জবাব দিব?

একটি ট্রেনের গল্প

 একটি ট্রেনের গল্প

একটি ট্রেনের গল্প

একবার আব্বার সাথে ঢাকা যাচ্ছিলাম। কোন এক স্টেশন থেকে একজন লোক ওঠলেন। কয়েক মিনিট পর আমি টয়লেটে যেতে ওঠে দাঁড়ালে আমাকে ডেকে বললেন "ভাই কি ওয়াশরুমে যাচ্ছেন, আপনি ফিরে আসতে আসতে আমি কি আপনার সিটে একটু বসতে পারি?" আব্বার দিকে তাকিয়ে দেখি উনি ইশারা করছেন রাজি না হতে। তবুও মানবতা দেখিয়ে বসতে বললাম, কয়েক মিনিটের ব্যাপারই তো। 

তো মূত্র বিসর্জন শেষে ওয়াশরুম থেকে ফিরে দেখি বান্দা আমার সিটে গভীর ঘুমে চলে গেছেন। বড়জোর ২-৩ মিনিটের ভেতরে কিভাবে ঘুমে চলে গেলেন আমি বুঝলাম না। 

ভাবলাম, হয়তো বেচারা অনেক ক্লান্ত, ঘুমাক একটু। আধা ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকলাম আমার সিটের পাশে। এরপর হালকা করে ডাক দিলাম,  নড়ন-চড়ন নাই। আরো ২০ মিনিট পর আবার ডাকলাম। ঘুম। 

ততোক্ষণে আব্বা ও ঘুম। আমি পাশে দাঁড়িয়ে পাহারা দিচ্ছি। এভাবে আরো, ১ ঘন্টা। এরমধ্যে অনেকবার ডাকলাম হালকা করে। একজন ঘূমন্ত মানুষকে কিভাবে ডাকি। পাশের মানুষজন পরামর্শ দিলো উনি ভং একটু জোরের সাথে ডাকার জন্য। আমার বিবেকে সাড়া দিচ্ছে না। 

সামনের স্টেশন পড়ায় ট্রেনের হুইসেলে হোক যে কোন ভাবে বান্দা একটা চোখ হালকা করে খুললেন, আমি ও তাকিয়ে ছিলাম উনার চোখের দিকে। বললাম, 'ভাই, প্লিজ ওঠেন' 

হালকাতালে আড়মোড়া ভাঙতে ভাঙতে বলতে 'আপনি ওয়াশরুম সেড়ে এসেছেন?' ততক্ষণে অলমোস্ট ২ ঘন্টা পাড়। 

অনেকক্ষন পর নিজের সীটে বসতে পারলাম। বান্দা দরোজার কাছে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। ভাবলাম, বাঁচা গেলো অবশেষে। এইবার বাকি পথ একটু রেস্ট নিয়ে যাবো। 

এমন সময় ছোট প্রকৃতি আবার ডাক দিলো। ২ মিনিট লাগলো আমার আসতে আর যেতে। তাড়াহুড়ো করে ফিরে এলাম। 

এবং এই দু'মিনিটের ভেতরেই আমাকে হতবাক করে দিয়ে বান্দা আবার আমার সিটে এসে ঘুমের ভং ধরে বসলো। 

এইবার বেশ ভালোভাবেই ডেকে গেলাম একটু পরপর। না, যে জেগে ঘুমায় তাকে কি আর জাগানো যায়!!!!

এভাবেই বাকি যাত্রা গেলো।

বিমানবন্দর স্টেশনে আসার ঘোষণা এলো, অদ্ভুত ভাবে সুদির ভাই সাথে সাথেই ঝাঁকি দিয়ে ওঠে গেলো। আমার দিকে ফিরেও না তাকিয়ে নিজের ব্যাগেজ নিয়ে ট্রেন থেকে নেমে গেলো।

আমি আবার আমার সিটে বসার সুযোগ পেলাম। 

এতক্ষনে আব্বা আমার দিকে তাকিয়ে মুখ খুললেন, 'সোদানির ফুয়া, এলা তোর মানবতার বিষ মইজ্জি না?'

(সংগৃহীত লেখা)

৮ হাজার বছর আগের কঙ্কাল থেকে কিশোরের প্রতিকৃতি তৈরি

 ৮ হাজার বছর আগের কঙ্কাল থেকে কিশোরের প্রতিকৃতি তৈরি



আজ থেকে প্রায় ৮ হাজার বছর আগে বর্তমান  নরওয়ের পশ্চিম উপকূলে স্বাভাবিকের তুলনায় বড় মাথার এক কিশোর গুহার ভেতর  একাকী মৃত্যুবরণ করেছিল। বিজ্ঞানীরা এখন এই প্রস্থর যুগের কিশোরের কঙ্কাল  থেকে তার পুরো শরীরের প্রতিকৃতি (ছবি) তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন।

বিজ্ঞানীরা ১৫ বছর বয়সী এই ছেলেটির নাম দিয়েছেন  ভিস্টেগুটেন, নরওয়ের ভাষায় যার অর্থ হচ্ছে 'ভিস্তের ছেলে'। ছেলেটির কঙ্কাল  যেখানে পাওয়া গেছে, সে জায়গার নাম ভিস্তে।

নরওয়ের হামলে প্রেস্টগার্ড জাদুঘরে ভিস্টেনগুটের কঙ্কাল এবং কৃত্রিমভাবে নির্মিত তার পুরো ছবি প্রদর্শন করা হচ্ছে।

পুরো শরীরের ছবি তৈরি করতে কয়েকমাস সময় লাগলেও ১৯০৭  সাল থেকে ছেলেটির অস্তিত্ব সম্পর্কে বিজ্ঞানী মহলে ধারণা ছিল। সেই সময়  নরওয়ের র‌্যান্ডাবার্গের প্রস্থর যুগের একটি গুহায় প্রত্নতত্ববিদরা এই  কিশোরের কঙ্কাল খুঁজে পেয়েছিলেন।

কেমন ছিল তার শারীরিক অবয়ব?

লম্বায় তার উচ্চতা ছিল ৪ ফুট ১ ইঞ্চি বা ১.২৫  মিটার। বয়সের তুলনায় এমনকি তখনকার মানুষের স্বাভাবিক উচ্চতার তুলনায় সে খাট  ছিল। তবে তার একটি রোগও ছিল যার নাম 'স্কেপোসেফালি'। এই রোগের কারণে তার  মাথা সামনের দিকে না বেড়ে পেছনের দিকে বাড়ে। বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন,  ছেলেটি হয়তো একাকী মারা গেছে। এ জন্য তাকে 'নিঃসঙ্গ বালক' নামেও ডাকতেন  বিজ্ঞানীরা। গুহার ভেতর থেকে তার কঙ্কাল যে অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে, তাতে  মনে হচ্ছে সে দেওয়ালে হেলানরত অবস্থাতেই মারা গেছে।

সুইডেনভিত্তিক ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ অস্কার নীলসন বলেন,  'হয় মৃত্যুর পর তাকে কেউ এভাবে হেলান দিয়ে রেখে গেছে অথবা সে এভাবেই মারা  গেছে। এ থেকে আন্দাজ করা যায় সে হয়তো নিঃসঙ্গভাব মারা গেছে, হয়তো পরিবার বা  বন্ধু-বান্ধব কারও অপেক্ষায় ছিল। তবে তার মুত্যু সম্পর্কে আমরা এর বেশি আর  কিছু জানতে পারিনি।'

স্কেপোসেফালির কারণে মাথার গঠন পরিবর্তন হলেও  শারীরীক ও মানসিক বৃদ্ধিতে এই রোগের কোনো প্রভাব নেই। নরওয়ের ইউনিভার্সিটি  অব স্ট্যাভেঙ্গারের মিউজিয়াম অব আর্কিওলজির অস্থিবিদ, যিনি নিজেও এই  কিশোরের অস্থি পরীক্ষা করেছেন, শন ডেক্সটার ডেনহাম বলেন, 'মাথা একটু বড় এবং  উচ্চতা একটু কম হলেও ছেলেটি সুস্বাস্থের অধিকারী ছিল।'

গুহাটির ভেতরে যে পরিমাণ খাবারের অবশিষ্টাংশ পাওয়া  গেছে, তাতে মনে হচ্ছে সেখানে খাবারের কোনো অভাব ছিল না। বরং বাসিন্দারা  গুহাটিতে থাকতেন, কাজ করতেন, ঘুমাতেন, রান্না করতে এবং খেতেন।

'ছবিতে ছেলেটির হাতে মাছ ধরার যে বরশি দেখা যাচ্ছে, হুবহু একইরকম না হলেও এমন একটি বরশি গুহার ভেতরেও পাওয়া গেছে।

শরীরের পূর্ণ ছবি তৈরির জন্য বিজ্ঞানীরা প্রথমে  ছেলেটির কঙ্কালকে কম্পিউটেড টোমোগ্রাফি বা সিটি স্ক্যান করেন। এরপর সেখান  থেকেব পাওয়া অবয়বেকর একটি প্লাস্টিকের রেপ্লিকা তৈরি করেন নেলসন। কিন্তু  তিনি ছেলেটির মুখের টিস্যুর ঘনত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারছিলেন না। এ  জন্য তিনি বর্তমানে উত্তর ইউরোপের ১৫ বছর বয়সী একজন ছেলের টিস্যু কেমন হতে  পারে, সেখান থেকে ধারণা নেন। নেলসন বলেন, '৮০০০ বছর আগে জীবিত থাকা একটি  ছেলের সঙ্গে এটি কতটা মিলল, সেটা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। কিন্তু আমাদের  অনুমান অনুসারে সবচেয়ে কাছাকাছি যেতে পেরেছি।'

আর কী বোঝা গেল?

কঙ্কাল পরীক্ষার সময় নীলসন দেখেন, ছেলেটির কপাল  তুলনামূলক ছোট এবং গোল। সম্ভবত স্কেপোসেফালির কারণে এমনটা হয়েছে। এ ছাড়া  তার নাকের উপরের অংশ সংকীর্ণ থাকলেও নিচের দিকটা প্রশস্ত ছিল।

ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে জানা গেছে ছেলেটির শরীর ও  চোখ ছিল বাদামি রঙের আর চুল ছিল ঘন কালো, যা সে সময় ওই অঞ্চলের মানুষদের  সঙ্গে সামাঞ্জস্যপূর্ণ।

ছেলেটির পূর্ণ অবয়ব তৈরির সময় তার মুখে একটু হাসি  দিতে চেয়েছিলেন নীলসন। কিন্তু 'ছেলেটি যে একাকী মারা গেছে' এই চিন্তা তিনি  মাথা থেকে সরাতেই পারেননি।

'আমি তাকে কল্পনা করেছি সে হয়তো এখনই সমুদ্রের দিকে  যাবে (তাকে যেখানে পাওয়া গেছে, তখন তার খুব কাছেই ছিল সমুদ্র) মাছ ধরতে।  নরওয়ের এই অংশটিতে অনেক বাতাস থাকে। তাই আমি তার ছবিতে চুল ও কাপড় বাতাসে  নড়ছে এমন একটা দৃশ্য রাখার চেষ্টা করেছি।'

গ্রন্থনা: আহমেদ হিমেল


Are .ML domains free?

Are .ML domains free? 




Yes, .ML domains are free, but there are some conditions and limitations that come with this offer.


.ML is a country code top-level domain (ccTLD) for Mali, a country in West Africa. In 2013, the government of Mali made a deal with a company called Freenom to offer free .ML domains to anyone who wanted one. Freenom is a Dutch company that provides free domain name registration services using a number of TLDs, including .TK, .CF, .GA, and .ML.


The free .ML domain offer has been available since 2013, and it has been very popular with people all over the world. The offer is still available as of my knowledge cutoff date of September 2021. However, it is important to note that the free .ML domain offer comes with some conditions and limitations.


Firstly, while the initial registration of a .ML domain is free, you will need to pay a renewal fee if you want to keep the domain name after the first year. The renewal fee is currently set at $15 per year, which is higher than the cost of many other TLDs. If you do not renew your domain name, it will be released back into the pool of available domain names, and someone else will be able to register it.


Secondly, there are some restrictions on the types of websites that can be hosted on a .ML domain. According to Freenom's terms of service, you cannot use a .ML domain for websites that contain "obscene, indecent, or offensive content," or that are "defamatory, libelous, slanderous, or threatening." You also cannot use a .ML domain for websites that promote "hate speech, discrimination, or violence." If you violate these terms of service, Freenom reserves the right to suspend or terminate your domain name registration.


Thirdly, there are some technical limitations associated with .ML domains. For example, some email servers may block emails from .ML domains because they are associated with high volumes of spam. Additionally, some web hosting providers may not support .ML domains, or may charge extra fees for hosting them.


In conclusion, .ML domains are free to register, but there are some conditions and limitations that come with this offer. While the initial registration is free, you will need to pay a renewal fee if you want to keep the domain name after the first year. Additionally, there are restrictions on the types of websites that can be hosted on a .ML domain, and there are some technical limitations associated with them as well. If you are considering registering a .ML domain, it is important to carefully consider these factors and to choose a domain name that fits your needs and budget.

what is the lowest cost of domain?


 


The cost of a domain name can vary greatly depending on a number of factors. These factors can include the type of domain name you want, the domain registrar you choose, and the length of time you register the domain for. In general, the lowest cost of a domain name is around $0.99 per year. However, there are many other factors that can affect the cost of a domain name, which we will explore in more detail below.


Firstly, it is important to understand what a domain name is. A domain name is the unique address that identifies a website on the internet. It is the part of a website address that comes after the "www." and before the ".com", ".org", ".net" or other top-level domain (TLD) extension. For example, in the website address "www.example.com", "example" is the domain name.


One of the factors that can affect the cost of a domain name is the type of domain you want. There are many different types of domains available, including country-specific domains (such as .co.uk or .de), generic domains (such as .com, .org, or .net), and new TLDs (such as .blog, .club, or .app). The cost of each of these types of domains can vary depending on a number of factors, including the popularity of the TLD, the length of the domain name, and whether the domain is already registered or available for purchase.


Another factor that can affect the cost of a domain name is the domain registrar you choose. A domain registrar is a company that manages the registration of domain names. There are many different domain registrars available, including popular companies like GoDaddy, Namecheap, and Google Domains. The cost of a domain name can vary depending on the registrar you choose, as well as any additional services or features that they offer.


The length of time you register a domain name for can also affect the cost. Most domain registrars offer domain registration for a period of 1-10 years, with the option to renew the registration at the end of the term. Generally, the longer the registration period, the lower the cost per year. For example, registering a domain for 5 years may be cheaper per year than registering it for just 1 year.


In addition to the factors above, there are many other factors that can affect the cost of a domain name. These can include the demand for a particular domain name, the keywords included in the domain name, and the potential for future resale of the domain. In some cases, a domain name may be sold for millions of dollars, while in other cases it may be available for just a few dollars.


In conclusion, the cost of a domain name can vary greatly depending on a number of factors, including the type of domain, the domain registrar, and the length of registration. While the lowest cost of a domain name is around $0.99 per year, it is important to carefully consider all of the factors involved in purchasing a domain name, and to choose a domain name that fits your needs and budget.

সুখ

~~সুখ~~



শ্বশুর মশাই নিজের বাটি থেকে টুক করে একটা মাংসের টুকরো বৌমার পাতে দিয়ে দিলেন। বৌমা অপ্রস্তুত অবস্থায় পড়ে বলে, 'এ কি করলেন বাবা? আপনিই খান। সারাদিন আপনার যা পরিশ্রম'! মাংসের টুকরোটি ফেরত দেওয়ার জন্য সে জেদাজেদি করতে থাকে। 

শ্বশুর মশাই অর্ধেন্দু বিশ্বাস তৃপ্ত মনে বৌমাকে বলেন, 'মা, আজ আমি খুব খুশি হয়েছি'।

বৌমা লিপা কৌতুহলী হয়ে জানতে চায়, 'কেন বাবা? কি হয়েছে'?'

অর্ধেন্দু বাবুর একটি বই বাঁধাইয়ের দোকান রয়েছে। বই বাঁধাইয়ে খুব নাম-ডাক তাঁর। অঢেল কাজ। বাড়ির সঙ্গেই দোকান। বাড়ির মধ্যেই রয়েছে আরও দুটি রুম। সংকীর্ণ জায়গা। বাড়ির চতুর্দিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ডাঁই করা বই। একটি রুমে থাকেন লিপার শ্বশুর ও শাশুড়ী। আরেকটি রুমে লিপা ও তাঁর স্বামী। এছাড়াও রয়েছে এক অবিবাহিত ননদ। ননদটি কখনো বাবা মায়ের রুমে, কখনো সিঁড়ির নিচে থাকে। রাস্তার ধারের রুমটায় সারাদিন বই বাঁধাইয়ের কাজ করেন অর্ধেন্দু বাবু। ছেলেও হাত লাগান কাজে। লিপার বয়স অল্প। উচ্চ মাধ্যমিক পাশের পর সদ্য বিয়ে হয়েছে। শ্বশুর মশাইয়ের অনুপ্রেরণায় পড়াশোনা চালিয়ে যায় লিপা। কলেজে ভর্তি হয়েছে ম্যাথেমেটিক্স অনার্স নিয়ে।  পড়াশোনা সেরে লিপা আজ শ্বশুর মশাইয়ের বই সেলাইয়ের কাজে হাত লাগিয়েছিল। কাজের ফাঁকে ফাঁকে পছন্দের বই গুলো একটু একটু করে পড়েও নিচ্ছিল। সেই দেখে শ্বশুর মশাই আজ খুব খুশি। সেই সূত্র ধরে শ্বশুর মশাই বৌমার প্রশ্নের জবাবে বলেন, 'আজ আমি খুব খুশি। নতুন বিয়ে হয়েছে। এইটুকু একটা মেয়ে! সব জড়তা ছেড়ে আজ তুমি বই বাঁধাইয়ের কাজ করলে। তোমারই সংসার। এইভাবেই সংসারটাকে আগলে রেখো মা'।

এতক্ষণ শাশুড়ী মা চুপ করে ছিল। তিনি এবার অভিমানী সুরে বললেন, 'আমি কেউ নই বুঝি! এতো বছর রেঁধে বেড়ে খাওয়ালাম যে!'

শ্বশুর মশাই খুনসুটি করে বললেন, 'হুম, তাই উনি শুধু রান্না ঘরটাই চেনেন, বই বাঁধাই ঘরটা চিনতেই পারলেন না'!

সবাই হা হা করে হেসে উঠলো। খাওয়া শেষে সকলের বিছানা রেডি করে দিয়ে লিপা গেল ননদের কাছে। তাঁর কয়েকটা ম্যাথের প্রবলেম সলভ করে দিয়ে লিপা বললো, 'চল, এখন একটু লুডো খেলি'।

ননদ তো আনন্দে এক পায়ে খাড়া। লুডোর আসরে একে একে যোগ দিল লিপার শ্বশুর ও স্বামী। ওদিকে লিপার শাশুড়ী এক কোনে বসে ঘনঘন হাই তুলছে।

লিপার শ্বশুর মশাই শাশুড়ীকে বললেন, 'ওগো শুনছো! ঘুমিয়ে পড়ো যাও! আগামীকাল ভোর ভোর উঠতে হবে'।

লিপা কৌতুহলী হয়ে জানতে চায়, 'কেন? ভোরে উঠবে কেন'?

শশুর মশাই বললেন, 'একটা সারপ্রাইজ আছে'।

সবাই চুপ। সবাই ভাবছে, কি সারপ্রাইজ! লিপা জিদ ধরলো, 'আর টেনশন নিতে পারছি না। বলেই দাও না বাবা'।

শশুর মশাই বললেন, 'আগামীকাল সকাল সকাল  আমরা সবাই মিলে মহিষাদল রথের মেলা যাবো'।

আনন্দে নেচে উঠলো লিপা। ননদ গিয়ে জড়িয়ে ধরলো বৌদিকে। লিপা আনন্দে বললো, 'বাবা, আমি ফুচকা খাবো'। 

শ্বশুর মশাই আবেগ প্রবন হয়ে বললেন, 'আচ্ছা, আচ্ছা মা! যা খাবে তাই খাওয়াবো'।

এরপর প্রত্যেকেই দ্রুত বিছানায় চলে গেলো।


এরপর মাঝে কেটে গেল দশটা বছর। শ্বশুর মশাই মারা গেছেন ইতিমধ্যে। যুগের পরিবর্তনে ডিজিটাল মিডিয়ার আগ্রাসনে ছাপা বইয়ের জনপ্রিয়তাও কমেছে। ফলে বই বাঁধাইয়ের দোকানটাও বন্ধ হয়ে গেল। বছর পাঁচেক হল লিপা একটি হাইস্কুলে চাকরি পেয়েছে। লিপার একটি সন্তানও হয়েছে। স্বামী একটা ছোট কোম্পানিতে কাজ করে এখন। ননদ বিয়ে করে চলে গেছে। শাশুড়ী মাতা আধ্যাত্মিক জগতে নিজেকে বন্দী করেছেন। সেই ছোট্ট একতলা বাড়িটা আজ আরও আধুনিক হয়েছে। সেটি এখন তিনতলা। ফ্লোরে মার্বেল দেওয়া। বাথরুম, কিচেন সবই আধুনিক। 

এক গ্রীষ্মের সন্ধ্যায় লিপা বাড়ির তিনতলায় একটি ঘরে এ সি চালিয়ে একাকী বসে আছে। এমনিতেই সময় কাটছে না লিপার। তার উপর একটু আগেই একটা ছোট বিষয় নিয়ে স্বামীর সাথে প্রবল ঝগড়া হয়েছে। স্বামী রাগ করে বেরিয়ে গেছেন বাজারে। ছেলে এক তলার একটি রুমে পড়াশোনা করছে। শাশুড়ী মাতা একটি অন্ধকার ঘরে ধ্যান করছেন। লিপার হঠাৎ চোখ পড়লো দেওয়ালে টাঙানো শ্বশুর মশাইয়ের ফটোটার দিকে। পরম যত্নে ফটোটা নামালেন লিপা। তাঁর চোখে জল। ফটোটা ভালো করে মুছে বিড়বিড় করে রুদ্ধ কন্ঠে লিপা বললো, 'বাবা, আগে ছোট ঘর ছিল। অনেক মানুষ ছিল। থাকার জায়গা ছিল না। কিন্ত অনেক আনন্দ ছিল। জীবনে সুখ ছিল। আর আজ অনেক বড় ঘর হয়েছে। মানুষের সংখ্যা কমে গেছে। থাকার জায়গারও অভাব নেই। কিন্তু আজ আর আনন্দ নেই। জীবনে সুখ নেই'।


সুখ © রূপেশ কুমার সামন্ত


***ছবিতে আজলদীঘী লাল আমন চাল এর খুদের ভাত আর বাড়ির কবুতর এর দুইপিস মাংস 🙂

গল্প: আশ্রয়

 রুমে বসেই পাশের রুম থেকে আমার বন্ধু রিফাত আর ওর স্ত্রীর ঝগড়া শুনতে পাচ্ছি। এমনকি ঝগড়ার মূল বিষয়বস্তু আমাকে নিয়েই। রিফাত বারবার তিথিকে বলছে,

"তুমি একটু চুপ করো! পাশের রুমে কিন্তু মারুফ আমাদের সব কথা শুনতে পাচ্ছে। আর ওতো এখানে বেশিদিন থাকবে না, মাত্র তিনদিন। অফিসের কাজ সেরেই চলে যাবে বলছে। আর ঢাকাতে কেউ নেই দেখেইতো আমাদের এখানে এসেছে।"

রিফাতের কথা শেষ না হতেই তিথি উত্তেজিত কণ্ঠে বলে,

"আমি আর একটা কথাও শুনতে চাই না। কেনো আমাদের এখানেই আসা লাগবে কেনো? মেসে থাকতে পারলো না? আমার কি ঠ্যাকা পরছে যে এসব আলতু ফালতু মানুষকে রান্না করে খাওয়াবো? তুমি যদি একে বিতাড়িত না করো তাহলে আমি সাফ সাফ বলে দিচ্ছি আমি কোনো রান্নাবান্না করতে পারবো না।"

পরক্ষণেই আমি ঠাস করে একটি চড়ের শব্দ বেশ স্পষ্টভাবে শুনতে পেলাম। মুহূর্তেই আমার শরীরটা কেমন যেন করে উঠলো।


রাত এখন দশটা, তাই চাইলেও এই মুহূর্তে কোথাও যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। স্টুডেন্ট লাইফে ঢাকা শহরকে ভেজে খেয়েছি বলা যায়। কতশত মানুষকে নিজের মেসে জায়গা দিয়েছি তার হিসেব নেই কিন্তু এই মুহূর্তে নিজের দিক ভাবলে চলবে না সেটাও ঠিক। কারণ একটি ফ্যামিলি বাসাতে অবশ্যই আমার মতো এমন অচেনা এক ছেলেকে জায়গা দিতে যেকোনো নারীরই মন চাইবে না, এটাই হয়তো স্বাভাবিক। 



কোনোরকম ইতঃস্তত ভঙ্গিতে খাঁটের উপর বসে আছি এমন সময় রিফাত হাতে একটি বিরিয়ানির প্যাকেট নিয়ে রুমে প্রবেশ করলো। আমি নিশ্চিত হলাম এটা ও কিছুক্ষণ আগেই হয়তো দোকান থেকে কিনে নিয়ে এসেছে। টেবিলের উপর প্যাকেটটি রেখে যখনি ও প্লেট নিয়ে আসতে আবার রুম থেকে চলে যেতে ধরবে তখনি আমি ওকে ডাক দিয়ে বলি,

"রিফাত! আমার অফিসের কাজ কালকেই শেষ হবে আর কালকে সকাল সকালই এখান থেকে সরাসরি বের হয়ে যাবো, এরপর ট্রেনিং শেষে সেখান থেকেই বাড়িতে রওনা দিবো। বুঝছিস?"

রিফাত অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে,

"কেনো? তুই না বললি যে তোর তিনদিনের ট্রেনিং?"

আমি ইতঃস্তত ভঙ্গিতে বলি,

"না মানে আমিও তিনদিনের টার্গেট নিয়েই এসেছিলাম কিন্তু কিছুক্ষণ আগে অফিস থেকে কল দিয়ে বললো যে একদিনেরই নাকি ট্রেনিং হবে। তাই আর কি!"

রিফাত হয়তো বুঝতে পেরেছে কিছুটা হলেও যে আমি কোনো এক অজুহাতে ওর বাসা থেকে চলে যেতে চাচ্ছি। তবুও একটি দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে,

"ঠিক আছে। সমস্যা নেই। কিন্তু এমনিতে থেকে যা কয়েকটা দিন।"

শেষ কথাটা বলার সময় আমার মনে হলো ওর গলাটা কেমন যেন আটকে এসেছে। আমিও আর ওকে বিপদে না ফেলে হাসিমুখে বলি,

"আরে না না! অফিসের কাজ ছেড়ে কি থাকা যায়? আবার যদি ঢাকাতে আসি তখন নাহয় দেখা যাবে।"

রিফাত এক চিলতে হাসি দিয়ে বলে,

"ঠিক আছে তাহলে তুই একটু বস আমি প্লেট নিয়ে আসি।"

এই বলেই রুম থেকে বের হয়ে গেলো আমার বন্ধু। ওর কথা শুনে আমার মুখে হাসি ফুটানো ছাড়া আর কোনো উপায় নেই এইমুহূর্তে।


একটি আবাসিক হোটেলে উঠেছি দুইদিনের জন্য। ঢাকার শহরের হোটেল গুলো যে বেশ ব্যায়বহুল তা আগেই জানতাম, দুই রাত থাকার জন্যই আমাকে ব্যয় করতে হবে তিন হাজার টাকা আর খাওয়ার কথাতো বাদই দিলাম। হোটেল রুমের মধ্যে বসে আছি এমন সময় আমার স্ত্রী মিহি আমাকে কল দিলো। কলটি রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে বলে ওঠে,

"কেমন আছো? আর রিফাত ভাই ওনারা কেমন আছে? ভাবী ভালো আছেতো?"

মেয়েটির এতোগুলো প্রশ্ন শুনে আমি স্বাভাবিক কণ্ঠে বলি,

"হ্যাঁ সবাই ভালো আছে। আর ভাবীতো আজকে আমার জন্য অনেক কিছু রান্না করেছে। তার মতো অমায়িক মানুষ হয়ই না, বুঝছো?"

মিহি উৎফুল্ল স্বরে ওপাশ থেকে বলে,

"বলো কি! আমিও জানতাম রিফাত ভাইয়ের বউ ভালোই হবে। তুমি একটু ভাবীর কাছে ফোনটা দাও আমি একটু কথা বলি।"

আমার স্ত্রীর কথা শুনে মুহূর্তেই আমার হৃদপিন্ডটি ছ্যাঁত করে উঠলো। কোনোরকম নিজেকে আয়ত্তে এনে বলি,

"আরে এখন আমি একটু বাহিরে আছি। পরে নাহয় তোমার সাথে কথা বলিয়ে দিবো।"

মিহি আমার কথা শুনে আর এব্যাপারে কিছু বলেনি, টুকটাক ভালোমন্দ জিজ্ঞেস করে শেষমেশ ফোনটি রেখে দেয়।

আমি যদি এখন মিহিকে গতকাল রাতের কথাগুলো বলতাম তাহলে হয়তো ওর কষ্টের সীমা থাকতো না পাশাপাশি দুই একটা কথাও হয়তো আমাকে শুনিয়ে দিতো। কারণ একটা সময় যখন রিফাত ছাত্রাবস্থায় নিজের শূন্য পকেটে আমার মেসে মাসের পর মাস ফ্রি-তে থেকেছিল এবং খেয়েছিল সেটা মিহির অজানা নয়।


এরপর পার হয়েছে তিনবছর...

অফিস থেকে আমাকে শেষমেশ অনেক পত্র দরখাস্ত দেওয়ার পর ঢাকা শহরে ট্রান্সফার করলো। কারণ রিফাতের বাড়িতে সেই ঘটনার পর থেকে নিজের মধ্যে এক অজানা জেদ চলে এসেছিল যে যেভাবেই হোক ঢাকাতে ট্রান্সফার হবো। আমার স্ত্রী এখনো জানে না এই তোড়জোড়ের আসল কারণটা কি? 

সেদিন হঠাৎই রিফাত আমাকে ফোন দেয়। বহুদিন পর ওর ফোন পেয়ে বেশ খুশিই হয়েছিলাম কারণ যত যাই হোক বন্ধুত্বের বন্ধন কি আর ভোলা যায়? টুকটাক খোঁজখবর নিয়ে হঠাৎই রিফাত বলে,

"বন্ধু তোর সাথে একটা কথা ছিল! আসলে আমার চাকরিটা চলে যাওয়ার পর গ্রামে এসে ব্যবসা করছি সেটাতো জানিসই। মূলত আমার শাশুড়ির অবস্থা খুবই খারাপ! ক্যান্সার ধরা পরেছে। ডাক্তার বলছে ঢাকা নিয়ে ভালো ডাক্তার দেখাতে, তাই আর কি...।"

আমি কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলি,

"সমস্যা কি? আমার বাসায় চলে আয়। আমার বাসার একরুম সবসময় খালি থাকে। মূলত মেহমান দের জন্যই একরুম এক্সট্রা দেখে ঘর ভাড়া নিয়েছিলাম।"

রিফাত ইতঃস্তত ভঙ্গিতে বলে,

"সেটা নাহয় বুঝলাম কিন্তু ভাবীর আবার কোনো সমস্যা হবে নাতো? উনি যদি রাগ করে!"

আমি সামান্য হেসে বলি,

"আরে ব্যাটা কি বলিস! সেই তো মেহমানের কথা চিন্তা করে একরুম আমাকে বেশি দেখে বাসা ভাড়া নিতে বলছে। ওসব নিয়ে চিন্তা নেই চলে আয়। তোরা আসলে মিহি ঠিকই খুশি হবে। আর ঢাকাতে কেউ বেড়াতে আসে নাকি? প্রয়োজনের জন্যইতো আসে।"

রিফাত আমার কথা শুনে সাথে সাথে উৎফুল্ল স্বরে বলে,

"অনেক ধন্যবাদ বন্ধু। তুই না থাকলে আমার কোথাও বাসা ভাড়া নেওয়ারও উপায় ছিল না। এখন খুবই সংকটে আছিরে বন্ধু।"


রিফাতের স্ত্রী তিথির প্লেটে যখন আমার স্ত্রী বড় একটি রুই মাছের পিস দিতে যাবে তখনি তিথি লজ্জা পেয়ে বলে,

"আরে ভাবী কি করছেন? আপনাদের এখানে আশ্রয় পেয়েছি এটাই অনেক কিছু। এতো আয়োজনের কি দরকার ছিল? বলুনতো!"

মিহি মুচকি হেসে বলে,

"কি যে বলেন ভাবী! আপনার প্রশংসা আপনার মারুফ ভাই যে আমার কাছে কত করেছে তা কি আমি ভুলে গেছি নাকি? প্রতিবার ঢাকায় আসলে তো আপনাদের বাড়িতেই আসতো আগে। আর আপনি তার জন্য কত আপ্যায়ন করেছেন তা কিন্তু ভুলিনি। সেই হিসেবে এগুলোতো কিছুইনা।"

মিহির কথা শুনে তিথি আর রিফাত অবাক নয়নে মিহির দিকে তাকিয়ে আছে। কিছুক্ষণ বাদেই দুজন আমার দিকে তাকালো। আমি হালকা রহস্যময় হাসি দিয়ে খাওয়ায় মনোযোগী হলাম। হয়তো ওরা ভাবছে জীবনে একবারই তো ওদের বাসায় গিয়ে অপমানিত হয়ে ফিরেছিলাম সেখানে কিনা মিহি বলছে উল্টো কথা? তাহলে কি আমি আসলেই মিহিকে ওদের ব্যপারে মিথ্যা বলেছি?

দুজনই খাবার অল্প অল্প খাচ্ছে আর লজ্জায় কিছুক্ষণ বাদে বাদেই আমার দিকে তাকাচ্ছে। সেটা আমি সরাসরি না দেখলেও ওদের তাকানোটা অনুভব করছি বেশ। কিছু বিষয়ের প্রতিশোধ হয়তো পরোক্ষভাবে দিলেও তার তীক্ষ্ণতা হয় অতুলনীয় যার দৃষ্টান্ত আমার সামনেই। ভালো স্ত্রী পেতেও হয়তো ভাগ্য লাগে যেরকম আমি এক সৌভাগ্যবান।


(সমাপ্ত)


Author: Misak_Al_Maruf


***ছবিতে বোয়াল মাছ।